Monday, August 6, 2018

রবি ঠাকুর প্রসঙ্গে

রবি ঠাকুর প্রসঙ্গে


বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠতম সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর- কেউ কেউ একথা না মানতেই পারেন কিন্তু আমি মানি। আমার তো মনে হয় তাঁর মতো প্রতিভাবান সাহিত্যিক পৃথিবীর কোনো দেশে এখনো পর্যন্ত জন্মাননি। যাইহোক, এটা একান্তই আমার অভিমত। আমি রবিঠাকুরের একজন নামগন্ধহীন গুণমুগ্ধ পাঠক। আজকের এই সুদীর্ঘ বাক্যটি সেই তাঁকে নিয়েই লেখা।
রবি ঠাকুরের ছবি
প্রসঙ্গ রবীন্দ্রনাথ
  আমার সেইসব বাঙালি বন্ধুগণ যারা নিতান্তই প্রয়োজনের খাতিরে দুপাতা ইংরেজি সাহিত্য পড়ে কথায় কথায় ইংরেজি সাহিত্যের গুণগান করেন তথা বাংলা সাহিত্যের চরম অবমাননা করতে করতে রবিঠাকুরের সঙ্গে উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের অথবা অপরাপর স্বনামধন্য পাশ্চাত্য কবির তুলনা টেনে কবিগুরুকে ‘ক্ষীণ প্রতিভাবান’, ‘অনুকরণকারী’, ‘শৌখিন কবি’ ইত্যাদি অভিধায় হেয় প্রতিপন্ন করে শান্তির নিশ্বাস নেন তাদের উদ্দেশ্যে এই বার্তটুকু দিতে চাই যে রবি ঠাকুর শুধু একজন কবি বা সাহিত্যিক ছিলেন না বরং তিনি ছিলেন একজন প্রকৃত শিল্পী যে শিল্পী সাহিত্যচর্চার প্রতিটি শাখায় অনায়াস বিচরণ করে বাংলা সাহিত্যকে কৈশোর থেকে যৌবনে উপনীত করেছিলেন, যার ফলশ্রুতিতে বাংলা কবিতা পেল দিগন্ত-বিস্তারের স্বাদ, বাংলা সাহিত্যের মজলিসে স্থান পেল ছোটগল্প নামক নতুন এক সাহিত্যপ্রকরণ, বাংলা নাটকের শাখায় যোগ হল একগুচ্ছ ব্যতিক্রমী ধারার অসাধারণ নাটক, বাংলা উপন্যাসের ধারায় সূচিত হল এক নতুন অধ্যায় এবং সেই মহান শিল্পী রবীন্দ্রনাথ  একজন কালজয়ী মানবতাবাদী কবি হিসেবে বিশ্ব সাহিত্যের দরবারে বাংলা সাহিত্যকে প্রতিষ্ঠা করে বাংলা ভাষাকে গৌরবান্বিত করার পাশাপাশি বঙ্গ-সংস্কৃতির অপর দুইটি শাখায় অনন্য কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে গেছেন যার একটি হল চিত্রকলা যা, কোনো রকম প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই, তিনি জীবনের শেষপ্রান্তে এসে নেহাতই আকস্মিকভাবে শুরু করেছিলেন ও স্বল্পকালের সাধনাতেই পশ্চিমী শিল্পীমহলে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন এবং অপরটি হল রবীন্দ্রসঙ্গীত অর্থাৎ রবিঠাকুরের লেখা রবীন্দ্র ভাবনা-সমৃদ্ধ রবীন্দ্র-ঘরানার নিজস্ব সঙ্গীত যেগুলি বাংলা সঙ্গীতের ভান্ডারকে এতোখানি সমৃদ্ধ করেছে যে সঙ্গীতপ্রেমী বাঙালি শ্রোতাকে পরবর্তী পাঁচশত বছরের রসদ দিয়ে গেছেন এবং তাঁর সহস্রাধিক গানের মধ্যে "জনগণ মন অধিনায়ক" এবং "ও আমার সোনার বাংলা" গানদুটি দুই প্রতিবেশী দেশ যথাক্রমে ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের মর্যাদা পাওয়ায় কবি হিসেবে রবীন্দ্রনাথ সেই বিরল সম্মানের অধিকারী হয়েছেন যে সম্মান বিশ্বের আর কোনো কবির নেই এবং অদূর ভবিষ্যতে হবে বলেও মনে হয়না। (শব্দ সংখ্যা- ২৫৮)

পরিশেষে বলি, কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানোবেন। ধন্যবাদ।

No comments:

Post a Comment